ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস, দুশ্চিন্তায় কৃষক
- আপলোড সময় : ১৬-০৪-২০২৫ ১১:১৯:১৭ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-০৪-২০২৫ ১১:১৯:১৭ অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ::
আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে সপ্তাহব্যাপী উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কায় দ্রুত হাওরের ধান কাটতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। এমন পূর্বাভাসে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরের কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। হাওরের ধান এখনও পুরোপুরি না পাকায় কাঁচা ধান নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
বুধবার সরেজমিনে সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে দেখা যায়, হাওরের বেশির ভাগ জমির ফসল কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। কিছু কিছু জমিতে ধান কাটতে দেখা গেলেও তাঁর পরিমাণ খুবই কম।
কৃষকরা জানিয়েছেন, কোনো কোনো হাওরে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হলেও এখনো ৯০ ভাগ জমির ফসল কাঁচা রয়েগেছে। ধান পুরোপুরি পাকতে আরও সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগতে পারে। অতিবৃষ্টিপাত হলে হাওরের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে ফসলডুবির ঘটনাও ঘটতে পারে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
শান্তিগঞ্জের পাখিমারা হাওরের কৃষক মহিবুর রহমান বলেন, আমি এবার ১২ কেয়ার জমিতে ধান চাষাবাদ করেছি। আগাম জাতের ২ কেয়ার জমি পেকে যাওয়ায় কেটে ঘরে নিয়ে আসছি। বাকি ধান পাকতে আরও সপ্তাহ সময় লাগবে। এখন বৃষ্টিপাতের যে খবর শুনতেছি তাতে ভয়ে রয়েছি।
দেখার হাওরের কৃষক রইস মিয়া বলেন, আমার জমির ধান এখনো পাকেনি। প্রশাসন ধান কাটতে বলেছেন, এখন আমি কি কাঁচা ধান কাটবো? ভারি বৃষ্টিপাত হলেতো আমরা মাঠে মারা যাবো। একদিকে বাঁধ ভাঙা, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান জায়গীরদার বলেন, আমার ইউনিয়নে এখনো ৯০ ভাগ জমির ফসল কাঁচা রয়েছে। পুরোপুরি ধান পাকতে আরও সময় লাগবে। এখন বৃষ্টিপাত হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এবার সুনামগঞ্জের বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে। ফলন ভালো হওয়ায় চালের দিক দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ১৪১২ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে আগামজাতের ধান পাকায় ধান কাটতে শুরু করেছেন চাষীরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। আর সপ্তাহ দিন পর হাওরের ধান পুরোপুরি পেকে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, আমরা আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের একটি তথ্য পেয়েছি আগামী ১৮ এপিল থেকে ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি সুনামগঞ্জের অভ্যন্তরে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি হাওরের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে আতঙ্কিত না হয়ে আমরা কৃষকদের বলবো, হাওরে পাকা ধান যেনো কালবিলম্ব না করে কেটে ফেলেন। ধান কাটতে গিয়ে শ্রমিকের সংকট দেখা দিলে আমরা ছাত্র প্রতিনিধিদের জানিয়েছে, তারা তথ্য পেলে সহযোগিতা করবেন। এছাড়াও কৃষি বিভাগ কৃষকদের সেবায় সার্বক্ষণিক সচেষ্ট রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফসলরক্ষা বাঁধে নজরদারি বাড়াতে পিআইসিদের নির্দেশনা দেয়া আছে। সমস্যা হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ